নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর :
রংপুর নগরীর রাধাকৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে নিয়োগ চূড়ান্তকরণে বিভিন্ন অপচেষ্টা চলছে বলে দাবি করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা একটার দিকে সচেতন অভিভাবকসহ স্থানীয় লোকজন ওই বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেছেন।
বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে মানববন্ধনে বিক্ষুব্ধরা বলেন, রাধাকৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতাধিকের বেশি নয়। বিদ্যালয়টিতে এক সময় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ছিল। এখন নানামুখী সমস্যায় জর্জড়িত। সকল সমস্যা পুঞ্জিভূত রেখে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। অনেকদিন ধরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা পদে কোনো লোকবল নেই। এ পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে লোক থাকলেও নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ওই পদে লোক নিয়োগের কথা বলা হয়নি। শুধুমাত্র সহকারী প্রধান শিক্ষক, নৈশ্যপ্রহরী ও আয়া পদে দুই দফা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অংকের দর কষাকষিতে ব্যস্ত সবাই। তিনটি পদের বিপরীতে মাত্র দুটি পদে আবেদন জমা হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুদ্দিন আজাদ তার আপন বোনকে আয়া পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। যদিও বয়স বিবেচনায় ওই পদে তার বোনের চাকরির জন্য আবেদনের সুযোগ নেই। কিন্তু জাল কাগজপত্র তৈরি করে নিয়োগ চূড়ান্তকরণের চেষ্টা করছেন। নৈশ্যপ্রহরী পদেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হবে বলে বিভিন্নভাবে আলোচনা করে যাচ্ছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। অনেকের কাছ থেকে টাকাও নেয়া হয়েছে। আগের প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করে গত পাঁচ মাসের ব্যবধানে প্রধান শিক্ষকের পদে তিনবার রদবদল হয়েছে বলেও জানান তারা।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে রাধাকৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম কাজল বলেন, আমরা এখনো কাউকে নিয়োগ দেইনি। পরপর দুইবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও এখনো একটি পদে কোনো আবেদন পড়েনি। এখন যারা অভিযোগ তুলছে তারা আমার কাছে অন্যায় আবদার করেছে। আমি তাদেরকে কোনো ভাবে আশ্বাস দিতে পারিনি বলেই তারা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছে। অথচ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সদস্য জানান, বিদ্যালয়ে তিনটি পদে নিয়োগ দিতে পরপর দুবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আবেদনের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে কোনো আবেদন জমা হয়নি। তবে আয়া এবং নৈশ্যপ্রহরী পদে অনেকে আবেদন করেছেন। চাকরিপ্রত্যাশীদের অনেকেই তদবির করতে চেষ্টা করছে, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে নিয়োগ বাণিজ্যের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা মোটেও সত্য নয়।